তাজা খবর:

নেত্রকোনায় ধর্ষণের অভিযোগে কবিরাজ আটক রাজধানীতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৬৯ ডিএমটিসিএল কর্মীদের মারধরের ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত আমাদেরকে একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে : মির্জা ফখরুল পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া যাবে না : প্রধান উপদেষ্টা ভারতীয় মিডিয়া বিশ্বব‍্যাপী বাংলাদেশের বদনাম ছড়াচ্ছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতীয় মিডিয়া বিশ্বব‍্যাপী বাংলাদেশের বদনাম ছড়াচ্ছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Monday, 17 March, 2025, at 11:27 PM

ENGLISH

অর্থনীতি

বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প থমকে গেল!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশ : 01 মার্চ 2025, শনিবার, সময় : 13:30, পঠিত 279 বার

বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের সঙ্কট আরও গভীর হয়েছে, অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে দেশটির জ্বালানি শক্তি ব্যবস্থা হঠাৎ করে থমকে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৩১টি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে, যার মোট ক্ষমতা ছিল ২,৬০০ মেগাওয়াটেরও বেশি। এই প্রকল্পগুলো প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল এবং বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি স্বাক্ষরের আগে এসব প্রকল্প বাতিল করা হয়। সরকার এখন নতুন প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করছে, কিন্তু এসব দরপত্রে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম।


 


গত ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে সরকার তিনটি ধাপে নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে, কিন্তু এসব দরপত্রে সাড়া একেবারে কম। জ্বালানি বিশ্লেষকদের মতে, নতুন দরপত্রের শর্তাবলী অনেক ক্ষেত্রেই আগের শাসনামলের বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিয়েছে এবং বড় বড় বিদেশি কোম্পানিকে এগিয়ে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। ফলস্বরূপ, দরপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া খুবই হতাশাজনক, এবং এর জন্য কর্তৃপক্ষ সময়সীমা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।


 




বর্তমানে বাংলাদেশে শুধু ৪টি নবায়নযোগ্য জ্বালানি (বহবৎমু) প্রকল্প নির্মাণাধীন রয়েছে, যার মোট ক্ষমতা মাত্র ১০০ মেগাওয়াট। আর এভাবেই আগামী বছরগুলোতে নতুন কোনো বড় নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম, আন্তর্জাতিক এনার্জি (জ্বালানি শক্তি) অর্থনীতি ও আর্থিক বিশ্লেষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান বিশ্লেষক। তিনি বলেন, "এখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নন।"


 


নতুন প্রকল্পগুলোর বাতিল হওয়ার পর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে মারুবেনি কর্পোরেশন, টোটাল গ্যাস ও এংগ্রিন লিমিটেডের মতো বড় প্রতিষ্ঠানও ছিল। এই বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রকল্পগুলোর জন্য কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে, কিন্তু সেসব প্রকল্প শেষ পর্যন্ত বাতিল করা হয়। তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাংকগুলোর সাথে করা চুক্তি বাতিল করতে হয়েছে, যা বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি সই করার পূর্বশর্ত ছিল।


 


এই অবস্থা বর্তমান প্রক্রিয়ায় বড় কোনো আশ্বাস পেতে হলে দুরূহ মনে হচ্ছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (ইচউই) আর্থিক পরিস্থিতি এখন সংকটজনক। "এখনকার প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের সরকারের গ্যারান্টি পাওয়া যাচ্ছে না, যা পূর্ববর্তী প্রকল্পগুলোকে বাস্তবায়নযোগ্য করে তুলেছিল," বলে মন্তব্য করেছেন এক বিদেশি বিনিয়োগকারী।


 


২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম দরপত্রের মাধ্যমে ১২টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছিল, কিন্তু তার প্রতি সাড়া ছিল নাজুক। প্রথম দরপত্রের সময়সীমা একবার বাড়ানো হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও নতুন শর্তাবলীর কারণে প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ, নতুন শর্তাবলী আরও শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য নির্ধারিত জায়গাগুলোর আশপাশে অনেক পূর্ববর্তী সময়ের বিনিয়োগকারীদের জমি রয়েছে, যাদেরকে আগামী প্রকল্পগুলোর জন্য নির্বাচিত হতে পারে।


 


বর্তমানে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির ক্ষমতা ৯৯৩ মেগাওয়াটের কিছু বেশি, যেখানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৭,৮৮৪.৭ মেগাওয়াট। বাংলাদেশ এখন যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা দেশের জ্বালানি সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলোর জন্য একটি বড় সংকটের সংকেত দেয়, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।


 


একটি বায়ু এবং একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়া বর্তমানে দেশে ১৪টি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রয়েছে, যার মধ্যে ১১টি কেন্দ্র গঠিত হয়েছে এমন ব্যক্তিগত কোম্পানির মালিকানায়, যেগুলি সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের পছন্দের কোম্পানি হিসেবে পরিচিত। সর্ববৃহৎ সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ক্ষমতা ২০০ মেগাওয়াট।


 


বাংলাদেশ ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের সদস্য সচিব হাসান মেহেদী বলেন, "বর্তমান দরপত্রে বেশ কিছুভাবে পতিত আওয়ামী লীগের পছন্দের প্রতিষ্ঠানদের পক্ষেই সুবিধা রয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের শক্তি পরিবর্তনের এই মুহূর্তে অনিশ্চয়তা সবচেয়ে বেশি।" এখন সময় এসেছে বাংলাদেশের শক্তি খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার এবং বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার। তথ্যসূত্র : নিউ-এজ


সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।




অর্থনীতি পাতার আরও খবর

  • সর্বশেষ সংবাদ

    সর্বাধিক পঠিত

    সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু

    সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
    ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪, হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০১-৩
    ই-মেইল : [email protected], [email protected] , Web : http://www.banglakhabor24.com