তাজা খবর: |
Thursday, 6 February, 2025, at 5:52 PM | ENGLISH |
![]() |
|
অর্থ ও বাণিজ্যদেশে ব্যবসা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, নতুন সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরানিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ :
27 জানুয়ারি 2025, সোমবার,
সময় :
15:25,
পঠিত 181 বার
![]() ‘দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে নীতি সমন্বয়’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যামচেমের সহসভাপতি এরিক এম ওয়াকার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশে কয়েক বছর ধরে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নেই। বিশেষ করে জিডিপির তুলনায় বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ কম। এ পরিস্থিতি উত্তরণে বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি সংশোধন করতে হবে। এ ছাড়া শুল্ক–কর নিয়ে বিদ্যমান জটিলতা নিরসন করতে হবে। ট্রেড-জিডিপি অনুপাত কম অনুষ্ঠানে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘দেশে কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে অতিরিক্ত মনোযোগ দেখা যায়। এর পরিবর্তে আমি একটি নতুন অনুপাত প্রস্তাব করতে চাই, যা হবে ‘ট্রেড-জিডিপি’ অনুপাত।’ ২০২২ সালে ভিয়েতনামে ট্রেড-জিডিপি অনুপাত ছিল ১৮৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৭ শতাংশ, ভারতে ৪৯ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ায় ৪৪৫ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশে এ অনুপাত মাত্র ৩৪ শতাংশ। ফলে আমরা কীভাবে ব্যবসা বাড়াতে পারি, সে আলোচনা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে শুল্ক একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, কেবল কর সংগ্রহ নয়, রাজস্ব বোর্ডের উচিত, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকেও মনোযোগ দেওয়া। বাংলাদেশে ঋণের সুদহার একক সংখ্যায় আনতে হবে। বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সের বাইরে গিয়ে সব খাতের জন্য কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিতে হবে। বিভিন্ন সংস্থাকে একত্র করে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ সংস্থা গঠন করে তাদের ক্ষমতা দেওয়া দরকার। আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ বাড়ানোর আগে সরকারের নিজেদের ব্যয় কমানো উচিত। অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টার পরিবর্তে সম্প্রতি ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত। বর্তমানে সরকারের অগ্রাধিকার বিষয় হওয়া উচিত দারিদ্র্য, ক্ষুধা কমানো ও কর্মসংস্থান বাড়ানো। এ ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সুদহার। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা সরকারকে নতুন বিনিয়োগ ও পুনর্বিনিয়োগের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। কিন্তু এ জন্য আমাদের শুল্ক–কর ও বিনিয়োগের সুরক্ষা দিতে হবে। বর্তমানে দেশের ব্যবসায়ীরা আস্থার অভাবে ভুগছেন বলে জানান বহুজাতিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয়। তিনি বলেন, এটি দূর করা প্রয়োজন। শুল্ক–করের বাড়তি হার নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। তবে আমরা মনে করি, করের হার কমিয়েও কর সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব। এ ছাড়া দুর্নীতির সুযোগ বন্ধে নগদ অর্থের পরিবর্তে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির পরামর্শ দেন তিনি। কোকাকোলা বাংলাদেশের এমডি শাদাব আহমেদ খান বলেন, আমরা সরকারকে নতুন বিনিয়োগ ও পুনর্বিনিয়োগের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। কিন্তু এ জন্য আমাদের শুল্ক-কর ও বিনিয়োগের সুরক্ষা দিতে হবে। সিটি ব্যাংক এনএর কান্ট্রি অফিসার মো. মইনুল হক বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান আবার কমিয়েছে মুডিস রেটিংস। এ ছাড়া আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও দুটি সংস্থা এসঅ্যান্ডপি ও ফিচ বাংলাদেশ নিয়ে ঋণমাণ প্রকাশ করবে। যদি তিনটি সংস্থা ঋণমাণ কমিয়ে দেয়, তাহলে তা দেশের জন্য খুবই নেতিবাচক হবে। এ নিয়ে সরকারের কাজ করা প্রয়োজন। ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলে, তা স্বীকার করে নেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থ উপদেষ্টা ও এনবিআর চেয়ারম্যান। তাঁরা এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। ইতিমধ্যে কিছু জায়গায় স্থিতিশীলতা এসেছে। তবে মূল্যস্ফীতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নিয়েছে। এতে আবার ব্যাংক ও বেসরকারি খাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়েছে। এটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি। অর্থ উপদেষ্টা জানান, বিনিময় হার, শুল্ক–কর, নীতিমালা প্রভৃতি দিক দিয়ে দেশে এখনো ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বেসরকারি খাতকেও প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পরামর্শ দেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এগুলো না করলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে। যার ক্ল্যাসিক উদাহরণ বেক্সিমকো গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি এখন কর্মীদের বেতনও দিতে পারছে না। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ব্যবসায়ীরা নীতির ধারাবাহিকতার সমস্যায় ভুগছেন। এটি বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রেও বড় চ্যালেঞ্জ। বিদ্যমান শুল্ক–কর, বিশেষ করে আমদানি কর প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এগুলো সব একসঙ্গে প্রত্যাহার করা কঠিন হয়ে যাবে। তবে আস্তে আস্তে করা হবে। করদাতা ও কর আদায়কারীর মধ্যে অবিশ্বাসের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, করদাতারা ভাবেন, আয়ের সব তথ্য প্রকাশ করলে অনেক বেশি কর ধার্য করা হবে, আর কর আদায়কারীরা ভাবেন, করদাতার প্রদর্শিত সব তথ্য বানোয়াট। এ অবিশ্বাসের সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থ ও বাণিজ্য পাতার আরও খবর
|
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
|
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটুসম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
|