তাজা খবর: |
Tuesday, 18 March, 2025, at 12:33 AM | ENGLISH |
![]() |
|
জাতীয়রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর : ফিরে ফিরে আসে হতাশারানিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ :
24 এপ্রিল 2024, বুধবার,
সময় :
14:59,
পঠিত 923 বার
![]() সন্তানদের হারিয়েছেন। উপরন্তু একদিকে ক্ষতিপূরণ না পাওয়া, অপরদিকে এখনও বিচার না মেলায় ক্ষোভ জানান তিনি। জানান, দুর্বিষহ দিন যাচ্ছে তার। তিনি বলেন, “বড় ছেলে এক ছেলে সন্তান রেখে যায়। তাকে মাদ্রাসায় পড়াই। তাকে নিয়েই আছি। চায়ের দোকান করি। এভাবেই আছি। আজও কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। বিচারটাও পেলাম না।” ২০২৩ সালে ঢাকার সাভারে রানা প্লাজায় রুবি আক্তারের মতো স্বজন হারিয়েছেন আরও অনেকেই। হাজারো শ্রমিক নিজে হয়েছেন পঙ্গু কিংবা হয়েছেন শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ঘটনার পর থেকেই ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন ভুক্তভোগী ও নিহত শ্রমিকের স্বজনরা। ১১ বছরেও সেই দাবি পূরণ হয়নি। তাদের ভাষ্য, প্রতি বছর এই দিনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা আলোচনায় এলেও তারপর সবাই চুপ করে যায়। ভুক্তভোগীদের দাবি, এক যুগ পূরণ হওয়ার আগেই যাতে ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও বিচার পান তারা। রানা প্লাজার ছয় তলায় কাজ করতেন মনির হোসেন। ভবন ধসে পড়লে সেটির নিচে তিন দিন চাপা পড়ে থাকার পর উদ্ধার করা হয় তাকে। পায়ে গুরুতর আঘাত পান তিনি। এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই আঘাতের ক্ষত। সেদিনের ভয়াল স্মৃতি তুলে ধরে মনির হোসেন বলেন, “পৌনে ৯টার দিকে বিদ্যুৎ গেল। তখন জেনারেটর চালু করল আর ভবন ধসে পড়ল। তখন আমি ওখানে উপস্থিত ছিলাম। চারতলায় চাকরি করতাম। পায়ের কাছে যে মেশিন ছিল, সেটা পায়ে গেঁথে গেল। পড়ে গেলাম। এর ১০-১৫ মিনিট পর জ্ঞান ফিরলে দেখি ভবনে আটকা পড়েছি। তখন চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে থাকি। বের হওয়ার রাস্তা নাই। এভাবে তিন দিন আটকা ছিলাম। বুধবার পড়েছি, শুক্রবার ২টার দিকে উদ্ধারকর্মীরা বের করে।” বর্তমানে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনও অসুস্থ। পাঁচ মাস আগেও অসুস্থ হয়ে পড়ি। লিভারে সমস্যা। রক্তবমি হয়। হাসপাতালে ভর্তি হলে লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু টাকা পাই নাই।” ভবনের ষষ্ঠ তলায় কাজ করা শ্রমিক সালেহা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “১২ বছর কী করল সরকার? বছর হলে নেতারা আসে। ছবি তোলে। কিছুই পেলাম না। বিচারও হলো না।” ১১ বছর পরেও সেদিনের ঘটনা ভুলতে পারেন না তাসলিমা বেগম। তিনি বলেন, “সবসময়ই সেই দিনের কথা মনে পড়ে। আজীবন মনে হয় ভুলতে পারব না। কেউ কিছু করল না আমাদের জন্য। এখন বোতল কুড়ায়ে খাই। পা ভাঙা। কোনো কাজ করতে পারি না। আমাদের এমন যারা করলো বিচার হলো না। এখন দোয়া করি, যাতে আল্লাহ বিচার করে।” এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এখনও শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা বুঝে পাননি। এজন্য উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তারা। টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, “মামলার বিচারে সরকারের সদিচ্ছার দরকার। মামলা করেছে সরকার। তারা চাইলে এতো দিনে বিচার হতো। ১১ বছরে এ মামলায় ৪৮ বার দিন পড়েছে। গতকাল সরকারের প্রসিকিউটর এক সভায় বলেছেন নানা রকম সমস্যা আছে। ৫০০’র মতো সাক্ষীকে পাওয়া যায় না। তারা বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন, আসা-যাওয়ার খরচ পান না। সেখান থেকে আইনজীবীরাও টাকা পান না। আগামী বছর ঘটনার এক যুগ হবে। তার আগে আমরা এ মামলার বিচার চাই।” বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, “রানা প্লাজার ১১ বছর পার হচ্ছে। কিন্তু এখনও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, চিকিৎসা কোনোটাই দেওয়া হয়নি। আরও দুঃখজনক হলো, ১১ বছরেও এ ঘটনার সঙ্গে দায়ীরা দিব্যি ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। আমরা চাই অবিলম্বে রানা প্লাজা শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে দায়ীদের বিচার করতে হবে।” আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, “এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, এ বিষয়ে আমাদের যতটা সুযোগ আছে আমরা কাজ করছি। আমাদের সীমার মধ্যে যতটা সম্ভব কারখানা পরিদর্শন করে তাদের আমাদের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছি যাতে তারা ঠিক করে। পরবর্তীতে আবারও যাচাই করছি, তারা করছে কি-না।”
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয় পাতার আরও খবর
|
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
|
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটুসম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
|