তাজা খবর: |
Tuesday, 3 December, 2024, at 10:34 AM | ENGLISH |
|
শিক্ষাঙ্গনশিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে চবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি শিক্ষক সমিতিরআল ইয়ামিম আফ্রিদি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
প্রকাশ :
19 ডিসেম্বর 2023, মঙ্গলবার,
সময় :
19:28,
পঠিত 1599 বার
গত রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ৭ জন ও আইন বিভাগে ১ জন শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে উপাচার্যকে চিঠি দেয় চবি শিক্ষক সমিতি। তাদের দাবি, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য স্বেচ্ছাচারিতা করে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির আপত্তি থাকা স্বত্বেও এ নিয়োগ পক্রিয়া চালাচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের দপ্তরে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে উপাচার্যের দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চবি শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদের মুখে রবিবার রাতে আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয় উপাচার্যের বাসভবনে। পরে সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বাংল ও আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ এবং পূর্ববর্তী ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে চবি উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে সোমবার সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করে চবি শিক্ষক সমিতি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ তারিখ চবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেণু কুমার দের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতির সদস্যসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সোমবার বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক সমিতির তোপের মুখে এবং চার সদস্য বিশিষ্ট বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনি বোর্ডে বাংলা বিভাগের ২ সদস্য অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম (সভাপতি চবি বাংলা বিভাগ) এবং অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ (সাবেক ডিন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ চবি) নির্বাচনী বোর্ড সভায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিতর্কিত এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। অবস্থান কর্মসূচিতে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, চবি উপাচার্য অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে রাতের আঁধারে অবৈধ নিয়োগ বোর্ড পরিচালনা করে উপাচার্য পদে থাকার জন্য নৈতিক সমর্থন হারিয়েছে। তিনি এই পদকে কলঙ্কিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় হলো উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য। তাদের পদত্যাগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমরা শিক্ষক সমাজ বিশ্বাস করি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বলেন, উপাচার্য তার নিজের ক্ষমতার অবৈধ ব্যবহার করে আইন ও বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড আয়োজন করেছে। আজ আমরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম, কিন্তু উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের লাগামহীন নিয়োগ বাণিজ্য, প্রশাসনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আজ আমাদের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাদ দিয়ে এখানে দাঁড়াতে হয়েছে। এটা চরম লজ্জাজনক বিষয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রায় অর্ধমৃত। পুরোপুরি ধ্বংস হওয়ার পূর্বে আমরা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আযম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন অন্ধকার যুগ চলতেছে। আমাদের বিভাগ খুব ভালোভাবেই চলছে। আমাদের বিভাগে নতুন কোনো শিক্ষক প্রয়োজন নেই। তবুও অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড বসেছে। এটা আমার বাংলা বিভাগসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চরম লজ্জাজনক। অপরদিকে, পাল্টা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে চবি আইন বিভাগের শিক্ষকদের একাংশ। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.রকিবা নবী, অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহাসহ আরো অনেকে। তারা আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে চবি শিক্ষক সমিতির হস্তক্ষেপ কে অযাচিত বলে তীব্র নিন্দা জানান। তাদের মতে, শিক্ষক সমিতির এ কাজ অন্যায় এবং তারা কোরাম করে নিয়োগপত্রকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। পদত্যাগের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শিক্ষক সমিতি কি উপাচার্য নিয়োগ দেয়? শিক্ষক সমিতি কি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য বানিয়ে আনে? যদি উনারা মহামান্য রাষ্ট্রপতির চিঠি নিয়ে আসেন, তাহলে আমি সসম্মানে পদ ছেড়ে দিব। আমাকে এবং উপ-উপাচার্যকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন। যতক্ষণ আমাদের জায়গায় উনি অন্য কাউকে না দিবেন, ততক্ষণ কাজ করে যাবো। আইনের মাধ্যমে এসে, আমি কীভাবে আইন ভঙ্গ করব। এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন,আমি আড়াই বছরে কোথায় ৭৩ এর অ্যাক্ট লঙ্ঘন করেছি এটার কি তারা প্রমাণ দেখাতে পারবেন? শিক্ষক সমিতির কোন নেতারা আমাদের কাছে দাবি দাওয়া উত্থাপনের জন্য কখন অ্যাপয়েনমেন্ট নেন নাই, এটা হল শিষ্টাচার। আমি যখন শিক্ষক সমিতির সভাপতি তখন সবার দাবি মহামান্যের কাছে তুলে ধরেছি। আমি শিক্ষকদের পারিতোষিক নিয়ে কাজ করেছি। আমি তো শিক্ষকদের জন্য সবই করেছি। উপাচার্যের কার্যালয়ে এই প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রকিবা নবী, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মামুন, প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রহমান নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিক্ষাঙ্গন পাতার আরও খবর
|
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
|
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটুসম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
|